বইঃ মেঘের সাঁকো
লেখকঃ ইরশাদ জামিল
ইরশাদ জামিলঃ সমকালীন সাহিত্যপাড়ায়
এক সম্ভাবনার নাম। উঠতি যুবক। মূলত অন্ত্যমিল-গদ্যছন্দের উপর ভর করে লেখেন। সুন্দর শব্দ-অলংকার দিয়ে প্রকৃতি, নারী, মন, সমকালীন সমাজ, রাষ্ট্রতন্ত্র–কে তুলে আনেন ছড়ায়-কবিতায়। সংক্ষেপে বলতে গেলে ইরশাদ জামিল এমনটাই।
————
এবার চলুন মূল আলোচনায় আসি। ‘মেঘের সাঁকো’ কবি ও ছড়াকার ইরশাদ জামিলের প্রথম সন্তান। পরম ভালবাসায় আর যত্নে বড়ো করেছেন সন্তানটাকে। ৫৫ রকমের মেঘকে একসাথে করে তৈরী করেছেন ‘মেঘের সাঁকো’। তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু মেঘ হচ্ছে শেষ বেলায়, মহান বিজয়, মায়ের ভাষা, মাঝি, খামোশ, মেঘের সাঁকো ও আবুল সিরিজ(১-৬)। দেশপ্রেম, সমকালীন সমাজের অসঙ্গতি ফুটে উঠেছে উপরে উল্লেখিত ছড়া ও কবিতাগুলিতে। পুরো কাব্যগ্রন্থটাই এমন।
ভীষণ পছন্দ আছে শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে। মধ্যবিত্ত আবেগ, ভালবাসা, অনুভূতিকে গড়পড়তাভাবে না সাজিয়ে দুর্দান্ত শৈল্পিক কায়দায় সাজিয়েছেন।
* ‘কে আর পারে এমন করে
বাসতে তোকে ভালো,
সেই তো আমি, আমার ‘পরেই
জ্বালিয়ে রাখিস আলো।”
(আমার ছায়া)
*”খামোশ, এবার থামাও এসব
পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে,
পাগলাঘোড়া লাগামছাড়া
ছুটছে ভীষন খেয়ালে!”
(খামোশ)
এই দুই ছড়াই বুঝিয়ে দিচ্ছে তিনি জাতকবি ও ছড়াকার। অনেক গভীর থেকে তুলে আনেন এমন সব আবেগ। তাই ছড়া-কবিতাগুলি অনিন্দ্য হয়ে উঠে। সমকালীন সময়ের জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকার আল মাহমুদ ছড়াগ্রন্থটির ভূয়সী প্রশংসা করে ভূমিকা লিখেছেন। তবুও যদি সমালোচনা করতেই হয়, সেক্ষেত্রে বলবো দু’একটা লেখায় অন্ত্যমিলে সামান্য গড়িমসি হয়েছে। সেগুলোকে এদিক-ওদিক করে শুধরে নিলে পুরো গ্রন্থটিই একটি অনবদ্য সৃষ্টি হয়ে বেঁচে থাকবে।
সবমিলিয়ে সত্যি অবসরে একটা ভালো বই হিসেবে কাছে রাখতে পারেন। মন্দ হবে না। ভালোই লাগবে। শুভ কামনা ‘মেঘের সাঁকো’ এর জন্য। সামনের দিকে ছড়াকার ইরশাদ জামিল আরো ভালো ভালো ছড়া আমাদের উপহার দেবেন। যেগুলি তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে। অনেকদিন। শুভ কামনা প্রিয় ছড়াকার।