অনেক প্রহর কেটে গেল,কেটে গেল অনেকগুলো বছর
আমার সময় যেন আর কাটতে চায়না
এতে আমার কোন হাত নেই
সুতরাং আমি ভবিষ্যতের মুখ চেয়ে বসে আছি।
ভালবাসার কারণে আজ আর আমি বলতে পারিনা
তোমায় আমি এক হাত দেখে নেব
আমার সময় বুঝি আর কাটতে চায়না
নিরানন্দের জীবন আমার আনন্দের অবকাশ পায়না।
অনেক অনেক আগের কথা
সফেদ ফেনার মত মেঘেরা যখন উত্তর মেরুতে ভেসে যেত
তাজমহলের পাথরে পাথরে যখন শ্যাওলা জমতে শুরু করেনি
ভূপেন হাজারিকা যখন আমি বাংলায় গান গাই সুর তুলতো
আমরা তখন সে এক ভীষণ ভালবাসার মধ্যে ছিলাম
সেদিন আমরা একে অন্যের চোখের মনি ছিলাম।
আমাদের মধ্যে দুই যুগ কোন কথা নেই
কে বলে দেবে আমি এখন আর কিবা করতে পারি
যে আকাশে কখনো মেঘ জমবে বলে ভাবিনি
সে আকাশ দীর্ঘ কুড়িটা বছর কালো মেঘে ঢাকা
আমি ভাবতেও পারিনা মেঘ শিঘ্রই কেটে যাবে।
নুরুদ্দিনের মা, আমি তোমায় এখনো ভালবাসি,
আমি তোমায় আজীবনের জন্য ভালবাসি,
কিন্তু হায়! সবর্শেষে তুমি আমায় বলেছিলে
পেনথ্রু মাই নেম ফ্রম ইওর হার্ট
কী করে বলতে পারলে!
নাম কি কখনো কাটা যায় হৃদয় থেকে।
আমি জানি এটা কোন কথার কথা ছিলনা
অনেক বছরতো কেটে গেল
আমার সময় যেন আর কাটতে চায়না
যে সময় পিছনে ফেলে এসেছি তার জন্য অন্তহীন আক্ষেপ
নুরুদ্দিনের মা,তুমি যদি ফিরে আসো সেই আশায়
আরো ক’টা বছর বেঁচে থাকতে খুব ইচ্ছে করে।
তোমার বয়স যখন ষোল বছরে পড়েছে
আমার তখন সতের ছুই ছুই
একদিন নরসুন্ধ্যা নদীতে কলিম মাঝির নৌকায়
সারা বিকেল নৌকাভ্রমন করে যখন ফিরছি
তোমার চুলে বিলি কেটে বললাম নুরুদ্দিনের মা
আজকের বিকেলটা কেমন কাটলো?
তুমি ফিক করে হেসে দিয়ে বললে
নুরুদ্দিন কে?আমি কি করে তার মা হলাম?
তবে নামটা যে তোমার ভাল লেগেছিল
সে আমি তোমার চোখ আর মূখের হাসি দেখেই বুঝেছি
সেই থেকে আমি তোমায় নুরুদ্দিনের মা বলে ডাকি।
আমাদের নুরুদ্দিন কেমন আছে জানতে চাইবো না
সে আসার অবকাশ পেলো কোথায়
তার আগমনীর সুর আমার বাশিতে ধ্বনিত হবার আগে
একখন্ড কালো মেঘ ঢেকে দিল গোটা আকাশ
সেই অন্ধকারে দু’জন পথ হারিয়ে অন্য কোথাও।
বাবুই পাখির মত আমাদের কুড়ে ঘরের স্বপ্ন
যেনবা আর কোনদিন সত্যি হবেনা
যেনবা আমাদের নুরুদ্দিন কোন কালেও আমাদের হবেনা
যদি কোন দিন আকাশ থেকে মেঘ সরে যায়
তবে জেনে রেখ সে আকাশে তোমার জন্য চাঁদ হয়ে আলো দেব
আমার অপেক্ষা নিরন্তর।
লেখক হয়ে জন্ম নেইনি, লেখক হতেও নয়। তবু আমি লেখক হলে, সেটাই হবে ভয়। জাজাফী এমন একজন যার অতীত এবং ভবিষ্যৎ জানা নেই, বর্তমানই সব।